সিজারের পর ইনফেকশনের কারণ ও করণীয় কি ?

সিজারের পর ইনফেকশনের কারণ ও করণীয় কি?বিস্তারিত জেনে নিন-

 বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে নরমাল ডেলিভারির চেয়ে সিজারিয়ান ডেলিভারির সংখ্যাই বেশি দেখা যায়।সেই সাথে সিজারের পর ইনফেকশনের সংখ্যা তুলনামূলক কম নয়।

সিজারের পর ইনফেকশনের কারণ ও করণীয় কি
সিজারের পর ইনফেকশনের কারণ 

স্বাস্থ্যমমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি বছর ৩২ লক্ষ প্রসূত হয়, তার মাঝে ৪২ শতাংশ,মানে ১৩ লক্ষ প্রসূত হয় সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে।তাদের অনেকেই আবার প্রসূত পরবর্তী সময়ে সংক্রামনে ভোগেন।কিছু কিছু ক্ষেত্রে তো আবার অপারেশনের পূনরাবৃত্তি করতে ও দেখা যায়।

সিজারের পর ইনফেকশনের কারণ কি ?

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলেন যে,হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ,  সিজারের সময় জিনিসপত্র সঠিকভাবে জীবাণু দূর না করা, সিজারের কক্ষ সঠিক ভাবে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন না করা, রোগীর পোশাক  পরিমিত পরিস্কার না থাকা, রোগীকে তার কক্ষে নেয়ার পর স্বজনরা দেখা সাক্ষাৎ করা, রোগীর পুষ্টির অভাবে,সিজারের সময় ব্যবহারিত পানি জীবাণু মুক্ত না করা।অন্যদিকে  সিজারের পর কিছুটা কালেকশন শরিরের ভিতরে থেকে যাওয়া, রোগীর রোগ গতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা এসব কারনে ইনফেকশন হয়ে থাকে।তাছাড়া হাসপাতালের এক বেড থেকে অন্য বেডের দূরুত্ব কম থাকায় একইসাথে অনেক রোগী থাকার ফলে হাচি কাশির মাধ্যমে ও সংক্রামিত হতে পারে। তাছাড়া  সিজারের পর সেলাইয়ের সময় রক্তনালি সঠিকভাবে বন্ধ না হলে ইনফেকশন হতে পারে।

আরও জানুন:

ব্রেস্ট ক্যান্সার(Breast Cancer) কী? এটি হওয়ার কারণ এবং প্রতিরোধ করার উপায় কি ?

ইদানীং সিজারিয়ান ডেলিভারিতে ইনফেকশন৷  সারা পৃথিবীতেই হয়,তবে ইনফেকশন জীবনের জন্য মারাত্মক নয়।ইনফেকশনের কারনে রোগী মারা যায় না, কিন্তু  রোগীর অনেক কষ্ট হয়।

ইনফেকশনের বর্ননা দিতে গিয়ে এক প্রসূত বলেছিলেন জবাই করার কষ্ট ও সহ্য করা যায় তবে ইনফেকশনের পর ড্রেসিং ও সেলাইয়ের যে কষ্ট তা সহ্য করা যায় না। কোন মা বোনের যেন সিজারের পর ইনফেকশন না হয়।ইনফেকশনের ফলে রোগীর নিজেরই  হাটাচলা করতে সমস্যা হয় সেক্ষেত্রে  বাচ্চার দেখাশোনা করা কষ্টসাধ্য  হয়ে পড়ে। 

আরও পড়ুন:

মাসিকের আগে ও পরে স্তন ব্যথায় করণীয় কি

সিজারের পর মা ও শিশুর যত্ন প্রক্রিয়া

প্রথম সিজারের পর নরমাল ডেলিভারি সম্ভব কি না ?

সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ গুলো কি কি ?

বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতামত অনুসারে,মাত্র ৩ থেকে ৫% রোগীর ক্ষেত্রে সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তবে সিজারের  ইনফেকশন সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা থাকলে থাকলে খুব সহজেই এর জটিলতা কাঠিয়ে উঠতে পারবেন। সিজারের পর ইনফেকশন হলৈ  যে সব লক্ষণ দেখা দিতে পারে .....

  1. সাধারণত কাটা জায়গা চারপাশে লাল হয় ও ফুলে যেতে পারে ।
  2. ক্ষত জায়গা থেকে  দূর্গন্ধযুক্ত  পুজ বা রস বেড় হতে পারে । 
  3. ক্ষত জায়গা  এমনকি পেটে প্রচন্ড ব্যাথা হতে পারে ।
  4. গায়ে জ্বর জ্বর ভাব বা জ্বর আসতে পারে।
  5. সাধারনত প্রস্রাব করতে খুব কষ্ট হয় 
  6. মাসিকের রাস্তা দিয়ে  গন্ধযুক্ত তরল বা রক্ত আসতে পারে ।
  7. এমনকি সমস্ত শরীর ফুলে যেতে পারে ।

সিজারের পর ইনফেকশন হলে করনীয় 

বিএস এমএমইউর গাইনি বিভাগের অধ্যাপক ও অবসটেট্রিক্যাল এন্ড গাইনিকোলজিক্যাল সোসাইটি অফ বাংলাদেশ  জেনারেল সেক্রেটারি ড.ফিরোজা বেগম বলেন সিজারের ক্ষেত্রে ওটির নিয়ম মানা এবং প্রতি রোগীর জন্য আলাদা আলাদা ইকুইপেমেন্ট ব্যবহার  করা হয়,জীবাণু মুক্ত পানিও জিনিসপত্র ব্যবহার করা হয়  তবে ইনফেকশন এড়ানো সম্ভব।

সিজারের পর ইনফেকশনের কারণ ও করণীয় কি ?

  1. সিজারের পর ইনফেকশন হলে কাটা জায়গায় পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা রাখতে হবে।
  2. সাবধানে চলা ফেরা করতে হবে।
  3. ময়লা বা ঘাম জমতে দেয়া যাবে না।

সবচেয়ে যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

ডাক্তারের দেয়া পরামর্শ বা ওষুধের যথাযথ সঠিক ব্যবহার করতে হবে। 

মোট কথা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজেকে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে এতে রোগী ও বাচ্চার জন্য ভালো হবে।

Post a Comment

Previous Next