মেয়েদের যোনিপথে চুলকানির কারণ ও করনীয় কি ?

মেয়েদের যোনিপথে চুলকানি ?

মেয়েদের যোনিপথে চুলকানির কারণ ও করনীয় কি? যে কোন সমস্যা বা রোগ নিয়ে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা বেশি ভুগে থাকে। কেননা মেয়েরা নিজের শারীরিক সমস্যা নিয়ে কারো সাথে আলোচনা করতে ভয় পায় বা লজ্জা পায়। তা যদি হয় গোপনাজ্ঞের কোন রোগ তাহলে তো কোন কথায় নেই।কোন ছেলে তো দুরের কথা কোন মেয়ের কাছে শেয়ার করতেও লজ্জা পায়।এমনকি ডাক্তারের কাছে যেতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে। আর এই কারনেইমেয়েরা বেশি রোগে ভুগে থাকে।

                                                                                                                                                                                 মেয়েদের যোনিপথে চুলকানির কারণ ও করনীয় কি?

এমনি একটা রোগের কথা বলতে গেলেমেয়েদের খুবই পরিচিত বিরক্তিকর একটি রোগ যোনিপথে চুলকানি। এটা প্রায় মেয়েদেরইহয়। এক গবেষণায় তথ্য অনুযায়ী দেখা যায় প্রত্যেক জন নারীর ভিতর জন নারীর একবার হলে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।

এটা হওয়ার নির্দিষ্ট কোন বয়স না থাকলে বছর বয়স থেকে ৬০ বছর বয়স পর্যন্তর্য যে কোন সময় এই রোগ হতে পারে। যনিপথে চুলকানি কোন ভয়াবহ রোগ নয় তবে নারীদের জন্য এটা খুবই বিরক্তকর কষ্টদায়ক সমস্যা বা রোগ।

ধরুন একজন নারীর যোনিপথে চুলকানি হয়েছে তখন চলার পথে যখন সে তার গুপ্তঅঙ্গে হাত দেবে , তখন ওই অবস্থায় নিজের আসেপাশের লোকেদের উভয়ের ক্ষেত্রেই অপ্রস্তুত একটি বিষয় হয়ে দাঁড়া দাঁয়। এমন অবস্থা যদি না হলে, ভাবুন একজন নারী কোন বাজারে, অফিসে, পরিবারের লোকেদের সাথে অথবা কোন কাজে আছে ঠিক ওই সময় গুপ্তঅঙ্গে ভয়ানক চুলকানি শুরু হয় তখলন সে ঠিক ভাবে না কোথাও বসতে পারবে না কোন কাজ মনোযোগ দিয়ে করতে পারবে।

নারীদের এই সমস্যাকে ভাজাইনাল ইনফেকশন বলা হয় বা যোনি সংক্রমণ বলা হয়ে থাকে। সাধারণত গরমের সময় নারীদের এই সমস্যা বেশি হয়ে থাকে।


    যোনিপথে চুলকানি হলে যে সমস্যা দেখা দেয়

    .চুলকানি

    .যোনিপথ ফুলে যাওয়া

    .জ্বালাপোড়া

    .র্যাস বা ফুসকা পড়া

    .ঘা বা ক্ষত হওয়া

    .স্রাব

    .যোনিতে গন্ধ

    .প্রস্রাব করার সময় বা যৌন মিলনের সময় ব্যথা হওয়া

    .জ্বর

    ১০.কোমরে বা কোমরের আসেপাসে ব্যথা


    যোনিপথে চুলকানির কারন 

    কথায় আছে প্রতিকার এর থেকে প্রতিরোধ ভালো।তাই কোন রোগ হলে কি করনীয় তা জানার আগে জানা উচিত কি কারনে রোগ হয়। এতে করে রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

    মেয়েদের যনিপথে চুলকানি হওয়ার কারন---

    .ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস

    ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস যোনিপথে চুলকানির অন্যতম প্রধান কারণ। যোনিপথে সাধারণত কিছু ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। যার ফলে যখন কোন কারণে এই ব্যাকটেরিয়া গুলো বেশি বংশবিস্তার ঘিটায় ঠিক তখনই যোনিপথে ইনফেকশন বা চুলকানি শুরু হয়।

    ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস এর ফলে যোনিপথে চুলকানি হলে যে উপসর্গ দের্গ খা দেয় সেগুলো হলো --

    অতিরিক্ত চুলকানি হয়,দুর্গন্ধর্গযুক্ত তরল নির্গতর্গ হয় যোনিপথ দিয়ে।

    .ঈস্ট বা ছত্রাকের

    অনেক সময় ঈস্ট বা ছত্রাকের আক্রমণ যৌনিপথে চুলকানির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়া দাঁ য়। এটি সাধারণত Candida Albicans,

    ছত্রাকের ফলে হয়ে থাকে। এই ছত্রাক সাধারণত মেয়েদের যোনিতে পরজীবী হিসেবে থাকে। কিছু কিছু ল্যাকলোব্যাসিলাস নামে উপকারী ব্যাকটেরিয়া এই ধরনের ছত্রাকের বংশবিস্তার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্যে করে। তবে এন্টিবায়োটিক খেলে, গর্ভা বস্থায অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে হরমোনাল ইমব্যালেন্স হলে খাদ্যাভাসের ফলে উপকারী ব্যাকটেরিয়া মরে যায়, এতে করে ঈস্টগুলো তাদের জন্মের জন্য অনুকূল পরিবেশ পেয়ে যায় আর এর কারণে যোনিপথে ইনফেকশন হয়।

    . ট্রাইকোমোনিয়াসিস

    ট্রাইকোমোনিয়াসিস হলো একটি প্যারাসাইট এর আক্রমণ এর ফলে যোনিপথে চুলকানি হয়ে থাকে। এতে করে তলপেটের ব্যাথা, হলুদ,সবুজ রঙের স্রাব,অতিরিক্ত চুলকানি ইত্যাদি হয়।

    .বিভিন্ন ধরনের সেক্সু য়াল ট্রান্সমিটেড ডিজিজ যেমন গনোরিয়া,সিফিলিস, এইডস ইত্যাদির কারণে যৌনিপথে চুলকানি হয়ে থাকে।

    . যৌনাঙ্গে খোসপাঁচপাঁড়া, উকুন, মাইকোপ্লাজমা জেনেটালিয়ামের সংক্রমণ এর ফলে যোনিপথে চুলকানি হয়ে থাকে।

    .মেনোপোজের পরে মহিলাদের ইস্ট্রোজেন নামক হরমোন কমে আসে। এতে যোনি শুষ্ক হয়ে যায়। আর এর ফলে বিভিন্ন ধরনের পরজীবীর সংক্রমণ হয়ে থাকে। ফলে যোনিপথে চুলকানি হয়।

    .বিভিন্ন ধরনের পদার্থ আর্থ ছে যেমনবিভিন্ন ডিটারজেন্ট, সাবান, কেমিক্যাল, সুগন্ধি , রঙ ওয়ালা টিশ্যু পেপার, ডুশ,ফেমিনিন হাইজেনিক স্প্রে, ইত্যাদি ব্যবহার এর ফলে যোনিপথে চুলকানি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে

    .পিরিয়ড এর সময় অস্বাস্থ্যকর কাপড়, প্যাড ব্যবহার করার ফলে যোনিপথে চুলকানি হতে পারে।

    . রেনাল ডিজিজ,ডায়াবেটিস, একজিমা রক্তে কোন রোগ হলে বা অন্যান্য কোন ধরনের রোগ এর ফলেও যৌনিপিথে চুলকানি হয়।

    ১০. অবাধ যৌন আচরণে বা একাধিক ব্যক্তির সাথে সহবাস এর কারণে যোনিপথে হয়।

    ১১.অপরিষ্কার থাকলে

    ১২.যৌনাঙ্গ সকল সময় গরম বা আর্দ্র রাখলে।

    ১৩.শরীরে ডাইবেটিকস থাকলে যোনিপথে চুলকানি হয়।

    আরও জানুন:

    অনিয়মিত ঋতুস্রাব( Irregular Period) নিয়মিত করার কিছু সেরা ঘরোয়া টিপস

    মেয়েদের স্তনে যেসকল সমস্যা হয়এবং করণীয় 

    ইউরিন ইনফেকশনের কারণ ও করণীয় 

    গুগলে মানুষ এই সম্পর্কে কি সার্চ করে?

    যৌনিতে চুলকানি হলে অনেকেই গুগল করে থাকেন। গুগলে যে বিষয়ে সার্চ করা হয় তা নিম্নরুপ: যৌনিতে চুলকানি হলে ঘরোয়া উপায়, যৌনি চুলকানি েদূর করার ঔষধের নাম, মেয়েদের যোনিতে চুলকানির ঔষুধ, যৌনিতে চুলকানি হয় কেন, প্রসাবের রাস্তায় চুলকানি হলে কি করনীয়, চুলকানি প্রতিরোধের উপায়, জরায়ু চুলকানি দূর করার ঔষধ, পুরুষের প্রস্রাবের রাস্তায় চুলকানি কেন হয় ইত্যাদি ইত্যাদি।

    যৌনিতে চুলকানি সম্পর্কে মানুষ গুগলে কি জানতে চায়?
    যাইহোক, আপনার যৌনিতে যদি চুলকানি হয়, তাহলে কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করতে পারেন। অথবা আপনার চুলকানি মারাত্বক হলে সরাসরি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে দ্রুত চিকিৎসা করুন।

    যোনিপথে চুলকানি কমানোর কিছু ঘরোয়া উপায়

    আ্যপেল সিডার :

    গরম পানিতে অ্যাপল সিডার ভিনিগার দুই চামচ পরিমাণ মিশিয়ে ভালো ভাবে যৌনাঙ্গ ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার এটা করলে চুলকানি কমে যাবে।

    দই :

    দই এর প্রলেপ চুলকানিতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দইয়ের ভিতর একটা কাপড় আনুমানিক এক ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে যোনিতে ভালোকরে লাগিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট ।তারলর ভাল করে ধুয়ে নিন। এতে করে চুলকানি কমে যাবে।

    বরফের সেকঁ :

    বরফের ঠাণ্ডা সেঁকসেঁ চুলকানি থেকে তাৎক্ষনিক ভাবে মুক্তি দিয়ে থাকে।

    লবন পানির সেকঁ

    পানিতে কিছুটা লবন মিশিয়ে যোনিপথ ভালো ভাবে পরিষ্কার করে নিন করতে পারেন। পর পর - দিন ব্যবহার করলে চুলকানির মত অসহ্য যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলবে।

    নারকেল তেল :

    নারকেল তেলকে ত্বকের জন্য ভালো উপকারী বলে ধরা হয় হয়।নারকেল তেলে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। এতে ত্বক থেকে চুলকানি দূরদূ হয়।, হালকা গরম পানি দিয়ে গোসলেরর পরে ত্বকে নারকেল তেল লাগাবেন। নিয়মিত এটি ব্যবহারের ফলে চুলকানি কমে যাবে।

    তুলসী পাতা :

    তুলসীপাতা চুলকানি দূরদূ করতে সাহায্য কিরে থাকে। তুলসী পাতা পেস্ট করে আক্রান্ত স্থানে ভালো করে লাগান। তারপর কিছুসময় রেখে দিন পরে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়াও তুলসীতে অয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য যা ত্বকের সমস্যা দূরদূ করতে সাহায্য করে। _

    ওটমিল :

    ওটমিল ত্বকের চুলকানি দূরদূ করার সাথে সাথে ত্বকের ময়লা দূরদূ করতে সাহায্য করে থাকে। গোসলের পানিতে সামান্য পরিমান ওটমিল মিশিয়ে নিতে হবে তারপর এই বানিতে ১৫ -২০ মিনিট বসে থকতে হবে। তবে এটা করা যদি সম্ভব না হয়, তাহলে ওটমিল স্ক্রাব করতে হবে চুলকানি যায়গায়।

    চিন্তা মুক্ত থাকা :

    সকল প্রকার সংক্রমণ বা রোগের সর্বা ধির্বা বড় কারণ হচ্ছে চিন্তা করা। আর এই কারনে যতদূরদূ সম্ভব চিন্তামুক্ত থাকতে হবে। যখন আপনি শরীরকে সম্পূর্ণরুর্ণ পে আরাম দেওয়া হবে না তখনই আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বলর্ব হয়ে যায়, এর ফলে আপনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন। এই জন্য শরীরকে সম্পূর্ণরুর্ণ পে চিন্তা মুক্ত রাখতে হলে আরাম দিতে হলে কমপক্ষে - ঘণ্টা ঘুম বা আরাম করুন।

    অতিরিক্ত যোনি পরিস্কার না করা :

    যোনিপথ সংক্রমণ এর থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য মূলত যোনিকে পরিস্কার রাখা দরকার। তবে যে কোন ধরনের সাবান দিয়ে যোনি পরিষ্কার করা যাবে না। কেননা শরীরের যোনি অংশ খুব সেনসিটিভ হয়ে থাকে।তাই প্রয়োজন অনুযায়ী সাবান বা বিশেষ কোন ধরনের তরল সাবান ব্যবহার করতে হবে।

    আমাদের মন্তব্য : bbbbnn  

    উপরের বিষয় গুলো পালন করলে একবারে চুলকানি না কমলেও সাময়িক সময়ের জন্য চুলকানি কমে গিয়ে আপনাকে আরাম দেবে।

    আর যদি পুরোপুরি সেরে যায় তাহলে তো ভালো। আর না কমলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।যে ওষুধ দেন ডাক্তার ,খাবার বা লাগানোর সেটার সঠিক ব্যবহার করতে হব।

    1 Comments

    Previous Next