মাসিকের আগে ও পরে স্তন ব্যথায় করণীয় কি ?

মাসিকের আগে ও পরে স্তন ব্যথায় করণীয় কি ? বিস্তারিত

                            মাসিকের আগে ও পরে স্তন ব্যথায় করণীয় কি,স্তন ব্যাথা কমানোর জন্য  ঘরোয়া উপায় ,ব্রেস্টে  ব্যাথা কমাতে খাবারের গুরুত্ব?,

অনেক মেয়ে বা মহিলাদের মাসিকের আগে ও পরে স্তন ব্যাথা হয়ে থাকে।তবে অনেকের  এই ব্যাথা সম্পর্কে ধারনা না থাকার ফলে ভয় পেয়ে যায়।মনে করেন এটা হয়তো স্তন ক্যান্সার এর লক্ষন। তবে এই  ধারন আএকদম সঠিক নয়।

স্তন ব্যাথা হলেই যে ক্যান্সার হবে এমন কোন কথা নয়।স্তন ব্যাথা অন্যান্য কারনে ও হতে পারে। লক্ষ করলে আমরা দেখতে পারি যে পিরিয়ড এর সময় স্তন ব্যাথা হতে পারে, বা স্তনের কোন সমস্যা  হলে,

হলে বা বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করালে ও স্তন ব্যাথা হতে পারে। এসকল বিষয় না জেনে আগেই ভুল ধারনা করে  ভয় না পেয়ে সঠিক ভাবে জানা উচিত।

সাধারণত মাসিকের আগে ও পরে  হরমোনের পরিবর্তনের কারনে  কিশোরীদের   পিরিয়ডের সময় প্রকৃতিগতভাবেই  স্তনে কিছুটা  ব্যাথা  অনুভব করতে থাকে। কিছু কুছু  সময় পিরিয়ডের  আগে  স্তন ব্যাথা হয়। পিরিয়ডের আগে হোক বা পরে  দেহে হরমোন  পরিবর্তনের ফলেই  এই ব্যাথা হয়ে  থাকে।এতে ভয়ের কোন কারন নেই।

পিরিয়ড  চলাকালীন অবস্থায়  বা তার আগে অথবা পরে অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। বেশিরভাগ সময় পেটে ও  কোমর এ ব্যাথা হয়।

আর এই ব্যাথা ছড়িয়ে পড়ে পুরো শরীরে।  কারও কারো আবার স্তনে ব্যথা হয়। কারও বমি  বমি ভাব হয় ।মুখে অরুচি ভাব  দেখা দেয়।  মাঝে মাঝে মুড সুইং হয়। এগুলি যেমন স্বাভাবিক। তেমনি অনেকের আবার পিরিয়ড চলাকালীন সময়  স্তনে তীব্র ব্যথা অনুভব করে। এটাকে বলা হয়  মাস্টালজিয়া । এ ধরনের ব্যথার ফলে  স্বাভাবিক জীবন যাত্রার মান  অনেক সময় অচল হতে পরে।   অনেক সময় তো  স্তনের এই ব্যথার ফলে ধারনা স্তন ক্যান্সার হয়েছে ; তবে  তাদের এই ধারনা  ঠিক নয়।পিরিয়ড  বা মাসিক চলাকালীন  সময় ইসট্রোজেন হরমোনের সাথে তাদের স্তনের বাড়তি স্পর্শকাতরতার ফলে  এই সমস্যাটির সৃষ্টি হয়।  সবসময় মনে রাখবেন এটা কোনো রোগ নয়, এটা শুধু মাত্র একটি উপসর্গ,এতে স্তন বা মেয়েটি কোনো ক্ষতি হবেনা ।

স্তন ব্যাথা কমানোর জন্য  ঘরোয়া উপায় ?

১.ওজন নিয়ন্ত্রণ: একজন মানুষের  সুস্থতার কথা চিন্তা করলে অবশ্যই দেহের উচ্চতার সাথে দেহের ওজনের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। এক্ষেত্রে  যেহেতু হরমোনের সাথে সম্পর্ক যুক্ত তাই দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণ করলে স্তন ব্যাথা কমানো সম্ভব বলে মনে করা হয়।

২.ম্যাসেজ: ম্যাসেজ আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যাথায় অনেক উপকারি। ব্যাথা পুরোপুরি না কমলেও ম্যাসেজ এর ফলে কিছুটা আরাম পেতে পারেন। সেক্ষেত্রে গোসলের সময়ে  সাবান মাখিয়ে কিছু সময় ম্যাসেজ করতে পারেন।এতে করে ব্যাথা কিছুটা কমে যাবে।

 ৩.পোশাক : শুধু অসুস্থতার কথা বলতে গেলে ভুল হবে। সব সময়ই পোশাক নির্বাচনে সতর্ক থাকা উচিত। পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে আরামদায়ক পোশাক পরায় ভালো।অন্তর্বাস হিসেবে বেশি টাইট বা বেশি ছোট ব্রা না পরে বড়  সাপোর্টার ব্রা বা ফিতাহীন ব্রা পরা উচিত এতে স্তন  ব্যাথা কম হবে।

৪.সেক দেওয়া: স্তন ব্যাথা কমানোর জন্য ফ্রিজের থেকে বরফ বা ফ্রিজের হিমায়িত সবজি একটি কাপড়ে নিয়ে কিছু সময় সেক দেয়া যেতে পারে এতে করে স্তন ব্যাথা কমে যাব

আরও জানুন:

মাসিকের সময় অতিরিক্ত ব্যাথা হলে করণীয়

ব্রেস্টে  ব্যাথা কমাতে খাবারের গুরুত্ব

সুস্থ থাকার জন্য খাদ্যের গুরুত্ব অপরিসীম। স্বাস্থ্যকির খাদ্য শরীরে বিভিন্ন ভিটামিনের অভাব পূরন করে।রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্যে করে। তাই পিরিয়ড চলাকালে স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করবেন যাতে করে  চর্বি কম  হয় এবং পুষ্টি বেশি থাকে।

এর ভেতর  ভিটামিন বি৬, ভিটামিন বি১ (থায়ামিন) ও ভিটামিন ই এসকল খাদ্য  উপাদান দেহের জন্য  খুব দরকার। এই  উপাদানসমৃদ্ধ খাবার  গ্রহণ করা উচিত

ক্যাফেইন অল্প পরিমাণে বা বাদ দিলে ভালো হয়, একটি খাদ্যতালিকা  পরিবর্তন কিছু কিছু  মহিলারা সহায়ক বলে গন্য করেন, যদি ও স্তন ব্যাথা    মাসিকের আগে বিভিন্ন  উপসর্গের উপর ক্যাফিনের ফলে চিকিৎসা অধ্যয়ন অনিশ্চিত। অতিরিক্ত  চর্বিযুক্ত  খাবার এড়িয়ে চলুন এসময়। ডায়েট অনুসরণের ক্ষেত্রে চর্বি এড়িয়ে কার্বোহাইড্রেট খান। এতে ব্যাথা কম হবে আসা করা যায়।ড্যান্ডেলিয়ন চা পিরিয়ড এর সময় পান করলে স্তন ব্যাথা কম হয়।তাই পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে এই চা দিনে তিন বার পান করতে হবে।

 নেশা জাতীয় জিনিস :

ধুমপান, মদ্যপান এগুলোর ফলে পিরিয়ড এর সময় স্তন ব্যাথা আরো বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই অন্তত পিরিয়ড হওয়ার আগে এসব বাজে অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। এতে করে স্তন ব্যাথা অনেকটায় কম হবে।

 অন্যান্য খাবার

বেকারি খাবার,প্রক্রিয়া জাত খাবার, চকলেট কোকাকোলা সহ বিভিন্ন কোমল পানীয়, মাশরুম,পিনির, আচার, কলা,বাদামের মাখন এই জাতীয় খাবার পিরিয়ড এর সময় কম খেলে স্তন ব্যাথা অনেকটা কম হয়। তাই পিরিয়ড চলাকালে সময়ে এই সকল খাবার কম খাওয়ায় উচিত।

লবণ :

তাছাড়া এসময় লবন খাওয়া ও কমাতে হবে। কেননা লবনের ফলে শরীরে পানি জমে যায়।যার ফলে স্তন ফুলে যেতে পারে ও ব্যাথা হতে পারে। এজন্য পিরিয়ডের আগে বা পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে লবন কম খেতে হবে।

আরও জানুন:

যে সব কারণে মেয়েদের অনিয়মিত  মাসিক হয় এবং যা যা করণীয় 

অনিয়মিত ঋতুস্রাবের কারণে শরীরে যে সব সমস্যা দেখা দিতে পারে ?

অবশেষে বলা যায় যে-

ব্যাথা যদি অতিরিক্ত হয় মানে সহনশীলতার বাইরে চলে যায় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসক এর কাছে গিয়ে পরামর্শ নিতে হবে।



Post a Comment

Previous Next