ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিছু খাবার আছে যা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দিতে পারে, তাই সেগুলো এড়িয়ে চলা বা খুব সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। নিচে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বর্জনীয় কিছু প্রধান খাবার ও পানীয়ের তালিকা দেওয়া হলো:
চিনি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার
সরাসরি চিনি: চা, কফি, জুস, বা অন্য কোনো খাবারে সরাসরি চিনি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
মিষ্টিজাতীয় খাদ্য: মিষ্টি, আইসক্রিম, কেক, পেস্ট্রি, চকলেট, ক্যান্ডি, জ্যাম ও জেলি ইত্যাদি পুরোপুরি এড়িয়ে চলুন।চিনিযুক্ত পানীয়: সফট ড্রিংকস (কোমল পানীয়), বিভিন্ন ধরনের ফলের জুস (যা চিনি দিয়ে তৈরি), এনার্জি ড্রিংকস এবং চিনিযুক্ত দুধ চা বা কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
উচ্চ শর্করাযুক্ত খাবার
সাদা চাল ও ময়দা: সাদা চালের ভাত, ময়দা দিয়ে তৈরি রুটি, পরোটা, নান এবং পাস্তা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। এগুলোর বদলে লাল চালের ভাত, লাল আটার রুটি বা ওটস খেতে পারেন, কারণ এগুলোতে ফাইবার বেশি থাকে।
আলু ও কন্দ জাতীয় সবজি: আলু, কচু বা মুখি কচুর মতো সবজিগুলোতে কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকে, যা রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়াতে পারে। তাই এগুলোর পরিমাণ সীমিত রাখুন।শুকনো ফল: কিশমিশ, খেজুর, শুকনো অ্যাপ্রিকট ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। এগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয়।
চর্বিযুক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার
তেলে ভাজা খাবার: সিঙ্গারা, পুরি, চপ, সমুচা এবং যেকোনো ধরনের তেলে ভাজা খাবার এড়িয়ে চলুন।
প্রক্রিয়াজাত মাংস: সসেজ, বেকন বা প্রক্রিয়াজাত অন্যান্য মাংস থেকে দূরে থাকুন।ফাস্ট ফুড: পিৎজা, বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ইত্যাদি ফাস্ট ফুড ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
স্যাচুরেটেড ফ্যাট: ঘি, মাখন, পনির এবং ফুল-ফ্যাট দুগ্ধজাত খাবার পরিমাণে কম খাওয়া উচিত।
অন্যান্য
অতিরিক্ত লবণ: অতিরিক্ত লবণ উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর।
অ্যালকোহল: অ্যালকোহল রক্তে শর্করার মাত্রা বিপজ্জনকভাবে কমিয়ে বা বাড়িয়ে দিতে পারে এবং ডায়াবেটিসের ওষুধের কার্যকারিতায় হস্তক্ষেপ করতে পারে।কিছু মিষ্টি ফল: আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা এবং তরমুজের মতো কিছু মিষ্টি ফলে প্রাকৃতিক চিনি বেশি থাকে। এগুলো সীমিত পরিমাণে খাওয়া ভালো। তবে, সব ফল বাদ দেওয়া উচিত নয়, কারণ অনেক ফলের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকে এবং সেগুলো উপকারী।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এই খাবারগুলো এড়িয়ে চলার পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চা করা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলাও জরুরি।